নিজস্ব প্রতিবেদক

রামু উপজেলার রশিদনগরে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দীর্ঘ এক যুগেরও বেশী সময় ধরে বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের এক নেতার মালিকাধীন জমি জবরদখল রেখেছিল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের এক নেত্রী। গত বছর ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর ওই নেত্রী গা ঢাকা দিলে দখলকৃত জমি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হন ভূক্তভোগী বিএনপি নেতা।

কিন্তু অভিযুক্ত আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের ওই নেত্রী পুনরায় জমিটি দখলের অপচেষ্টা চালানোর পাশাপাশি বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের সহ নানা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে।

অভিযুক্ত নীলিমা আক্তার চৌধুরী ওরফে লাকি চৌধুরী রামু রশিদনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ পাড়ার মৃত মফিজুর রহমান চৌধুরীর মেয়ে।

তিনি বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের জেলা শাখার সভাপতি। বিগত ২০১৮ সাল ও ২০২৪ সালে অনুষ্টিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি কক্সবাজার সদর-০৩ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে প্রচার-প্রচারনাও চালিয়েছিলেন।

ভূক্তভোগী এম. গিয়াস উদ্দিন একই এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে। আব্দুর রহিম রশিদনগর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি।

প্রাপ্ত অভিযোগে জানা যায়, বিগত ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হলে দলীয় ক্ষমতাকে অপব্যবহার করে বেপরোয়া হয়ে উঠেন। এরপর থেকে এলাকায় সাধারণ মানুষের জমি জবরদখল সহ নানা অপকর্ম চালাতে শুরু করেন। এতে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হন বিরোধী দল বিএনপির নেতাকর্মিরা। পরে গত ২০১২ সালে দলীয় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে নীলিমা আক্তার চৌধুরী স্থানীয় বিএনপি নেতার ছেলে গিয়াস উদ্দিনের মালিকানাধীন বসত ভিটাসহ ২০ শতক জমি জোর পূর্বক দখল করেন। কিন্তু সরকারি দলের নেত্রী হওয়ায় গিয়াস উদ্দিনসহ তার পরিবার অসহায় ছিলেন।

কিন্তু গত বছর ৫ আগস্ট ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর নীলিমা আক্তার চৌধুরী গণরোষ ও গ্রেপ্তার এড়াতে এলাকা ছেড়ে অন্যত্রে গা ঢাকা দেন। এতে ভূক্তভোগী গিয়াস উদ্দিন সহ তার স্বজনরা দখলকৃত জমি পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হন।

অভিযোগ সূত্রে আরও জানা গেছে, এখন দেশের পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করায় আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের ওই নেত্রী নীলিমা আক্তার আবারও জমিটি পুনরায় জবরদখলের জন্য নানা অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের লোকজনকে ব্যবহার করে জমিটি দখলের জন্য কয়েকবার অপচেষ্টাও চালিয়েছে। এর মধ্যে সম্প্রতি ভূক্তভোগী গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে রামু থানায় অভিযোগ দায়েরও করেছেন। এমনকি জমির দখল ছেড়ে দিতে সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকীও দিয়েছেন। এতে ভূক্তভোগী গিয়াস উদ্দিন নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।

আর জমির দখল ছেড়ে না দিলে মিথ্যা মামলায় আসামি করার হুমকীর পাশাপাশি ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করারও অভিযোগ করেছেন, ভূক্তভোগী গিয়াস উদ্দিন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নিলিমা আক্তার চৌধুরীর সঙ্গে মুঠোফোনে কল দিয়ে যোগাযোগ করা হলে তার বিরুদ্ধে আনীত সবধরণের অভিযোগ অস্বীকার করেন।

তিনি বলেন, জমির মালিকানার স্বপক্ষে তার সব ধরণের নথিপত্র রয়েছে। এই ব্যাপারে তিনি প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে হয়রানি ও ষড়যন্ত্রের জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।

ইতিমধ্যে গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে এ ব্যাপারে রামু থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বলেও তথ্য দিয়েছেন নীলিমা আক্তার চৌধুরী।